অনুভূতিবাদ - <!--Can't find substitution for tag [blog.sayedtaufiq]-->

সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ

সক্রিয় ছোটকাগজের লেখক

সর্বশেষ লেখা

Home Top Ad

প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা কোনো ফ্যাশেনবল বিষয় নয়, যা দিয়ে আপনি নিজের পাছায় একটা সীলমোহর লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবেন...

Sunday, November 10, 2019

অনুভূতিবাদ


অনুবন্ধ অনুভব:


অনুভূতি ও জীবন বিষয়ক অনুসন্ধান নীরিক্ষা জীবনের ও সমাজের প্রেক্ষাপটে করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভন্ন রকম কাঙ্খিত অনাকাঙ্খিত আচরন, বিতর্কিত মানুষের সাথে চলাফেরা করেছি হয়ত কখনো কখনো বা এ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অভ্যাস, মনস্বত্ত্ব, আচরন কে সমানভূতি দিয়ে অবধারণা, ব্যক্তিগত জীবনে, আচরনে, অভ্যাসে ক্ষেত্র বিশেষে নিজের উপর। তার প্রয়োগ, অভ্যস্ত হবার চেষ্টাসহ লাল-নীল-হলুদ প্রভূত সমাজে, পেশায় অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পদ্চারণা ও পর্যলোচনা করতে গিয়ে সেই ২০০০ সনে ঘর পালিয়ে পকেটে পনের টাকা নিয়ে "রিযিকের মালিক আল্লাহ" এ সারসত্যটুকু যাচাইয়ের জন্য অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করি এবং চিত্রশিল্পী ঋষিকেশ হালদার (বর্তমানে প্রয়াত) এর সহচার্যে অবস্থান করেছিলাম কয়েকদিন।এছাড়াও নানা সময়ে কখনও সংবাদ কর্মী, ধর্ম প্রচারক, তরুন লেখক, আলোকচিত্রী, চিত্রশিল্পী হবার ব্যর্থচেষ্টা করেছ।

উন্নয়নকর্মী হিসাবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রধান অঞ্চলে ছুটে বেড়িয়েছি মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ আচরন, অভ্যাস প্রত্যক্ষণ করবার জন্য বর্তমান আইনপেশায় সৃজনশীলভাবে প্রযুক্তিয়ানের স্বপ্নদেখা, অনুভূতির অংশ হিসাবে অপরাধমূলক আচরন ও যুব সমাজের মনস্তাপ, সাইবার ক্রাইম নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে তথ্য সংগ্রহ করছি। এ অনুসন্ধান এরই চলমান প্রক্রিয়া, অনাহূত আমার এই আচারণ যা সমাজের সকলের কাছে কখন বৈচিত্রপূর্ণ্য, কখন অনাকাঙ্খিত সবার কখনও পাগলামী মনে হতে পারে বা হয়েছে।
 এ কারণে চারপাশের পরিচিতি মানুষের কাছে ভিন্নভিন্ন সমালোচনা, প্রতিক্রিয়ার সম্মুখিন হয়েছি, মন ভেঙে গেছে তবুও আমার জীবনের মৌলিক ও একমাত্র উদ্দেশ্য অনুভূতির পর্যবেক্ষণ থেকে পথভ্রষ্ট হয়নি। এখনও নিজের জীবনের বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে একই সময়ে ও অবস্থায় ভিন্নভিন্ন আচরন এর প্রয়োগ করে ফলাফল প্রত্যক্ষণ করছি যা আমার কাছে কাঙ্খিত কিন্তু অন্যের কাছে কাঙ্খিত নাও হতে পারে। এমনও আচরন করেছি যে, আত্মহত্যার অনুভব প্রচেষ্টায় ব্যক্তির মনস্তাপ কেমন থাকে তার অন্বেষনে নিজেই দুইবার প্রচেষ্টা করেছি; একবার দড়ি কেটে পরিবারবর্গ নামায়, অন্যবার ঘুমের ঔষধের রেশ কাটাতে গলায় আঙুল দিয়ে বমি করায়।

এছাড়াও সম্পর্ক, প্রেম, বন্ধুত্ব, পরিবার, ব্যক্তিগত জীবন, আচরনসহ প্রভূত বিষয়ে ভিন্নভিন্ন আচরণের অনুভব প্রয়োগ করেছি। আর এ চলমান পরীক্ষায় অর্জন কিছুটা হলেও হারিয়েছি অনেক মুহুর্ত, আবেগ, বন্ধুত্ব সম্পর্ক, অর্থ, সময়। আর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি বিব্রত করেছে আমার পরিবারবর্গ ও স্বজনদের।
·          
মানুষগুলো আমাকে আমার আবেগকে আমার শক্তিতে রূপান্তর করতে নিয়ত সাহস জুগিয়ে চলেছেন।)


অনুভবক্রম :

    চিদ্রূপ : 
    চিদ্রূপ : 
    চিদ্রূপ : 
    চিদ্রূপ :
    চিদ্রূপ : 
    চিদ্রূপ : 
    কবিতাজীবন  কবি : অনুভূতিবাদ
    চিদ্রূপ : 
    এটি কল্পিত অবধারণ গতিচিত্র:
 আদম যখন ঈশ্বর

চিদ্রূপ : 

যা হবার তা হবেই

যা হবার নয় তা কখনও হবে না

যখন হবার কথা ঠিক তখনই হবে

এর এক মুহূর্ত আগে  পরে হবে না

এমনকি হতে পারতো না

মানুষের ভবিষ্যৎ বর্ণনার সামার্থ নেই

সে কেবল অনুমান করতে পারে!

কল্পনা করতে পারে। অসম্ভাবী করতে পারে না

কোন (বস্তু/অবস্তুকিছুর নির্দিষ্ট কোন মূল্য (ঠধষঁবনেই

মূল্য নির্ধারিত হয় স্থানকাল-পাত্র ভেদে ভিন্নভিন্ন

কোন কিছুই এমনকি মানুষ পর্যন্ত তার নিজের সকল কিছুই-যোগ্যতা-অযোগ্যতাঅক্ষমতাসামর্থসম্পর্কে সম্পূর্ণ রূপে অবগত থাকে না। সময় ভেদে কাল-কারণ এর উপরআবহ এর সাথে সমন্বিত হয়ে তা চিহ্নিত হয়

জড়বস্তু ব্যতিরিক সকল কিছুই অস্থির,

অস্থির হল প্রাণের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য

অনুভূতি তাকে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য-ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয় সম্পর্কে

সমষ্টিগতভাবে ভিন্ন ভিন্ন চেতনাঅস্তিত্বঅভিনবত্ব,

ক্রিয়াশীলতাদূর্বোধ্য/বৈধ্যতার তথ্য প্রদান করে

উপলব্ধীর তীব্রতার মাধ্যমে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি জানান দেয়

স্থিরতা অলীক এবং আপেক্ষিক বিষয়। প্রাণহীনগতিহীনবৈশিষ্ট্যহীননির্দ্দিষ্ট  অনুভীতহীনতার অলস-অনড় আত্মসমর্পন। মানুষের ক্ষেত্রে স্থিরতা হচ্ছে হঠাৎ থমকে যাওয়া স্পন্দনহীনতাযা জীব হিসেবে মানুষের বৈশিষ্ট্যের অকার্যকর অবস্থার চর্চা করা। মানুষ ইচ্ছে করলেই স্থির হতে পারে না। যেহেতু সে জড় না এবং যতক্ষন প্রাণ আছেততক্ষণ সে চেষ্টা করলেও স্থির হতে পারে না। তার শরীরে অঙ্গ-প্রতঙ্গশিরা-উপশিরা একই সাথে থমকে যায়স্থির হয় শুধুমাত্র যখন সে মৃত। মানুষের অভ্যন্তরে প্রত্যেকটি বিষয়ের পরিকল্পিতনির্দ্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা নির্ধারিত হয়ে আছে এবং সেই অনুযায়ী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকার্য-কারন সম্পন্ন হয়। যা মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে না বা নিয়ন্ত্রিত হয় না। সে শুধু স্থিরতার ভান করতে পারে। যেখানে উক্ত ভানকে মনোযোগ অর্থে আপেক্ষিক ভাবে স্থিরতাপ্রাণহীনতা-চাঞ্চল্যহীনতারজড়ত্ব প্রকাশের নাম বা শব্দ। যার কোন কার্য-কারন অবস্থা নেই। সে কোন ফলাফল এর জন্য দায়ী নয়। মানুষ হচ্ছেন তিনিযিনি অস্থিরতার বিভিন্ন উপায়উপকরণপারিপাশ্বর্িকতার মধ্যে দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। এই প্রক্রিয়ার যতটুকু তিনি উপলব্ধী করতে পারবেনসেই অনুভীত অবস্থার ভিত্তিতে গুনাগুনকার্যকারিতাকার্যহীনতাজড়তাসহ নানাবিধ বৈশিষ্টের প্রকাশ করেন। সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।  সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্ভর করে ব্যক্তির অনুভীত অবস্থাউপলব্ধীর সামর্থপর্যবেক্ষন পদ্ধতি এবং বুদ্ধিবৃত্তি চর্চার কৌশলের ্পর। ব্যক্তিভেদে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রকাশ ঘটে থাকে। যার কোনটাই সুনির্দিষ্ট নয় এবং তা নিয়ত পরিবর্তনশীল। তার ব্যপ্তিসম্ভাবনাআচরনঅবস্থানপ্রকাশনাআকাঙ্খাআসত্তিপরিসমাপ্তিযোগ্যতারীতি স্বত:সিদ্ধ কোন নির্দিষ্টতা নির্মাণে একই থাকে না

চিদ্রূপ : 

জগতের সকল কিছুই একই সময়ে একই বস্তুতে দুইটি স্বত্বার অস্তিত্ব বিরাজমান

স্বত্বা দুইটির আভ্যন্তরীণ ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটলে অসঙ্গতির সৃষ্টি হয় জটিলদুর্বোধ্য করে তোলে

একটি হল অভ্যন্তরীণ উপলব্ধিগত স্বত্বযা প্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এক মৌলিক অবস্থা। অন্যটি হল বাহ্যিক আচরনগত স্বত্বা। যা প্রতি নিয়ত পরিবর্তনশীলস্থান-কাল-পাত্র-ভেদে প্রকাশনা রীতিকার্যকারিতা প্রভাবিত হয়। এই আচরনগত স্বত্বা পরিচালিত হয় বুদ্ধিবৃত্তির মাধ্যমে। বুদ্ধিবৃত্তির বিন্যাসব্যপ্তিগভীরতাকার্যকরিতানির্মীত হয় আভ্যন্তরীণ উপলব্ধিগত স্বত্বা এবং বাহ্যিক আচরনগত স্বত্বার সমন্বয়  ভারসাম্য দিয়ে। ভারসাম্যমূলক অবস্থায় হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তি। যে কোন কিছু করা বা কোন কিছু হতে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করে। অভ্যন্তরীণ উপলব্ধীগত স্বত্বা সম্পূরক হয়পরিবেশপ্রতিবেশপ্রকৃতিজ্ঞান-বিজ্ঞান যা সম্পূর্ণ সত্যসরলকিন্তু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় ইন্দ্রিনুভূত অবস্থায়। সরল হবার জন্য যে সরলআচরণের সমন্বয় দরকার সেই সততাটুকুর অভাবে ক্রমশ দুর্বোধ্য  জটিল অবস্থার প্রকাশ ঘটে। স্বত্ত্বাধিকারী ভারসাম্যহীনতা বাধাগ্রস্থ হয়। দ্বন্দ্বের উৎপত্তি ঘটে। পাশাপাশি যে কাঙ্খিত বাহ্যিক আচরন হবার কথা ছিল তা না হয়ে সম্পূর্ণ অন্যরকম ফলাফল প্রকাশ করে। সৃষ্টি হয় অন্তহীন শূণ্যতার এবং স্বকীয়তার অভাবে পরনির্ভরশীলতার প্রয়োজন। জগৎ- সরল হওয়াই সবচেয়ে দুরূহ কাজ আর এই সরল করতে গিয়ে সব কিছু জটিল করে তুলছি। বিষ্মিত হবার জন্য যে সরলতা দরকার তার অভাব শুধু ইন্দ্রিয়ভূত হচ্ছে। আমরা বিষ্মিত হতে ভুলে যাচ্ছি

চিদ্রূপ : 

সৃষ্টির প্রত্যেকটি কিছুর জন্য প্রত্যেকটি কিছুই দায়ী ...

উভয়েই উভয়ের সারবস্তু  ফলাফল

যা তাদের আলাদা করে অন্যটির থেকেস্বকীয় করে তোলেগুণ  দোষের বৈশিষ্ট্য দান করে এবং আকৃতির মাধ্যমে চিহ্নিত হয়। স্বকীয়তা  বৈশিষ্ট্য তাদের কার্য-কারন ঘটায়। আর  সব কিছুই একই উৎসমূল হতে উৎপন্ন হয়।  উৎসের রহস্যময় চরিত্র  উদ্দেশ্যর উপাদান সমূহ প্রত্যেকটিকে প্রয়োজনীয় করে তোলে প্রত্যেকটির জন্য। আর প্রয়োজনীয়তা ঘটানোর জন্য মহাজাগতিক এতো আয়োজন এতো মহাজাগতিক রহস্যময়তা

কেন এই আয়োজন?

কেনইবা  উদ্দেশ্যর উৎসমূল জন্ম নেয়?

কেন জন্মদেন ?

আর জন্ম দেবার পর কেন মৃতু্য বা ধ্বংসের বা ফলাফলের প্রক্রিয়া ঘটানপ্রত্যেকটিই কি  প্রক্রিয়াধীন?

তবে কি প্রাণী জগৎ এর বাইরে যে বস্তু সমূহ (যেমনগ্রহনক্ষত্রআকাশভূমিমিল্কওয়েতথা  মহাজাগতিক বিন্যস্ত-অস্তিত্বগত সবের প্রত্যেকটি বস্তু সমপ্রক্রিয়ার গুনাগুন বহন করেযদি বহন না করে তবে তাদের উৎসমূল  উদ্দেশ্য ভিন্ন ভিন্ন হত। এটা যদি ভিন্ন ভিন্ন হয় তবে এসব কিছু একই সময়ে উৎপন্ন হয় না। যেহেতু  সবের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য প্রয়োজনীয়তা বা আবশ্যকতা এই আয়োজন প্রক্রিয়ার অংশ না হয়তাহলে কোন ফলাফল ঘটবে না। ফলাফল সব কিছুর মূল্য (ঠধষঁবদান করে। মূল্যহীন কোন কিছুই প্রয়োজনের উপাদান হতে পারে না। আর এটা না হলে আয়োজন সম্পূর্ণতা পায় না


অর্থাৎ এসব কিছুর যখন ফলাফল প্রয়োজনের অংশ এবং একই উৎস হতে প্রক্যেকটি উৎপন্ন তাই এরা পরিপূরকতাই সবকিছু একই স্বার্থেএকই সময়েএক উৎস হতে একই প্রয়োজনে কার্য-কারন সম্পন্ন করবে। অন্যথায় উদ্দেশ্যের ব্যাঘাত ঘটবে।  মহাজাগতিক আয়োজনের উপাদান সমূহ পরস্পর পরস্পরের প্রয়োজন এর বিপরীতে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করবে  বিঘ্ন ঘটাবে

যেহেতু সৃষ্টির প্রত্যেকটির নেপথ্যে একই নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে তাই একই উৎসমূল হতে সকল মহাজাগতিক উপাদান সমূহ উৎপন্ন হয় একই সময়ে একই প্রয়োজনে  সকলের মৌলিক ফলাফল সমমূল্যমানের এবং উভয়ই উভয়ের জন্য দায়ী। উৎপন্ন প্রত্যেকটির উৎসমূল একই এবং এই চিরস্থায়ী উৎস কখনই উদ্দেশ্যের অংশ হতে পারে না। তাই এটা আয়োজন প্রক্রিয়ার কেন্দ্র এবং নেপথ্যে যিনি উদ্দেশ্যে করেন তার নিজস্ব অংশ। যা প্রক্রিয়ার অস্তিত্ব  আয়োজনের সারবস্তু (ঝঁনংঃধহপবং আকার (ঝযধঢ়বপ্রদান করে

আর সমগ্র মহাজাগতিক বস্তু  অবস্তু সম্পর্কে চৈতন্যের বোধায়ন দ্বারা প্রক্রিয়ায় অস্তিত্বশীলতা অনুভূত হয়। বৈশিষ্ট্য  তদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবধারণাজ্ঞান অর্জনরূপান্তরস্থানান্তর সমন্বয় প্রভৃতির জন্য মৌলিক একক মাধ্যমে হল অনুভূতিযা সকল ইন্দ্রিয়  অতিন্দ্রীয় সামর্থের অন্তফল হচ্ছে অনুভূতি। ভাবভাবনাপ্রকাশধারণাবৈশিষ্ট্যমূল্যায়নেরধারনায়নঅস্তিত্বায়নপার্থক্যয়ানস্বতন্ত্রয়ান এত সমূহের সমষ্টিক সংরাগ এবং সম  বিপরীত অবস্থার ভারসাম্যই অনুভূতিবাদের সারকথা। অনুভূতিবাদ জাগতিক  মহাজাগতিক সকল বিষয়ে বিস্মিত জিজ্ঞাসার উত্তর আবিস্কার করে এবং কার্য-কারণ জগতে অন্তফলের মূল্যায়ন প্রকাশ করে

চিদ্রূপ : 

এই অনুভূতির চারণক্ষেত্রলালনক্ষেত্র হচ্ছে "জীবন", জীবন ছাড়া অনুভূতিঅনুভূতিছাড়া জীবন দুটোই অসম্ভব। জীবনকে গভীরভাবে উন্মোচিতউপলব্ধিত না করতে পারলে জীবনের রহস্যময়তাসরলতা বাস্তবতা বোঝা যায় না

একটি মানুষ তার নিজস্ব প্রকৃতিগত স্বাভাবিকতাঅস্বাভাবিকতা দিয়ে একে ভোগ করে। সে জীবনের কতখানি উপলব্ধি করেএই উপলব্ধিগত বিবর্তন-স্পর্শিতজাগৃত হয় নতুন নতুন ধারণা পায় এবং জীবনের এই অংশে অনেক নতুন কিছুর আবিস্কার বুঝতে পারা সম্ভব হয়। জীবন অনেক অংশে সার্বিকতারযা সামগ্রিকতা প্রকাশ করে। বিচিত্রতারহস্যময়তা এর স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যবোধের প্রবণতার কারণে স্বকীয়তার জন্য একেকজন একেকভাবে চিন্তা করে প্রকাশ করেন। তাই এর সামগ্রিকতায় প্রাণ থাকে।  জীবন যখন বোধগম্য তখন এটি মনুষ্যজীবন মনে হয়। সম্ভবনা জাগায় জাগরণের। অন্যান্য প্রাণীদের সাথেজড়বস্তুর সাথেমানুষের পার্থক্য এখানেই। জীবন তাই এতবেশী দ্বিধা-দ্বন্দ্বেরহঁ্যা-না'করবকরবনা'হবে-হবেনা' তথা ভিন্নমুখীভাবে একটি মুদ্রার বৈশিষ্ট্যর মত এপিট-ওপিট করে চলে। আর  কারণে একজন জীবনটাকে যে ভাবে দেখে অন্যজন সে ভাবে নাও দেখতে পারে। জীবন ভোগের ব্যাপারে একই প্রক্রিয়া দেখা যায়। মত পার্থক্য শুধুমাত্র দৃষ্টিগত উপলব্ধির জন্য ঘটে এর কতকটুকু সার্থকতা পায় আবার কতটুকু পায়না। এই 'পায়নাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠে কেন পায় নাতখন সৃষ্টি হয় হতাশার

জীবন ঈশ্বরের মতই সত্য

যাকে ধরা যায় নাদেখা যায় নাছোঁয়া যায় নাবোঝাযায় অনুভূত  দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে

ঈশ্বর হচ্ছে মানবিক-মানসিক মস্তিষ্ক-চিন্তার এমন এক অবস্থাযেখানে পরিতৃপ্তিপরিত্রাণআত্মরক্ষার এবং পরলৌকিক সুখ-স্বাচ্ছন্দের সান্ত্বনা অন্বেষণ করে। এটি বোধের বিপ্লবী বিবর্তন। সত্য-মিথ্যা অলীক এখানে। চেতনার  অবস্থার পরিবর্তন করা যায় না। প্রত্যেকের নিজের জন্য একই ঈশ্বরকে এক এক গুণ  রূপে আরাধনা করেনকামনা করেন

আর জীবনের উপলব্ধিত অনুভূতির অনুসন্ধান করতে গিয়ে তার অনুভূত উপলব্ধির সমপর্যায়ের বর্ণনা উপস্থাপিত করেন বোধে। সাথে সাথে জীবনের চলমান রূপের অনুভব  প্রকাশের পাশাপাশি জীবন কেমন হতে পারতকিভাবে হলে হতে পারতযে রকম হওয়া উচিত ছিলসে রকম হয়েছে তাও অনুভব করেনপ্রত্যক্ষ করেন এবং দৃশ্যকল্পের সমপ্রসারণ করেন

বস্তু্তুত মন হচ্ছে মানবিক মূল্যবোধের অধিকার  অঙ্গীকার। মূল্যবোধ হচ্ছে আত্মা। আত্মার চারপাশে বিকিরণের কেন্দ্রভূত সার্বিকতাআপেক্ষিকতাউৎসআবর্তিত উন্মোচনে পরিবেষ্টিত আবয়বই মন। তাই আত্মা বা মন এক বস্তু নয়। মনের উৎপত্তি আত্মা থেকে। আত্মা হচ্ছে প্রকৃতির অনুভূত অংশে মনোগত সংবেদ সৃষ্টি করে মানবিক গতির বিনিময়ে


মনশরীর  বাহ্যিক প্রকৃতি থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে আত্মার কাছে পেঁৗছে দেয়। মনের নিজস্ব কোন উপলব্ধি নেই। সে শুধু আত্মার বাহকতথ্যউপাত্ত সংগ্রহকারী অবস্থা। এক্ষেত্রে মূল্যায়ন কার্যক্রম তথা যাচাই-বাছাইহঁ্যা-না  সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণে আত্মাকে সহায়তা করে যে অবস্থা সেটি বিবেক। এক্ষেত্রের নানাবিধ কার্য-কারণগত সৃষ্ট সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। আত্মা প্রশমিত হয়ে নিজেকে যখন ব্যপ্তির দরজার দিকে নিয়ে যায় তখন মন অনুভূতির তীব্রতা বুঝতে পারে। এটি আবেগের উপশমগত প্রদাহ। আবেগের উৎপত্তি-তীব্রতামন  আত্মার সংমিশ্রনসংঘটন বা সংঘবদ্ধতা এবং সংবেদন থেকে

মন প্রকৃতি থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে
আত্মা সেগুলোকে ধারণ করে
বিবেক তার পর্যালোচনা করে বিচার করে

অনুভূতিহচ্ছে প্রকৃতির অংশ জীবন অংশগুলোর লালন-পালননির্দেশনায় ন্যাস্ত থাকে মানুষ
এই মানুষ বিন্যস্ত হয় মনআত্মা  বিবেকদ্বারা

একজন ধনবানের দু: আরো প্রাপ্তির। একজন মধ্যবিত্তের দু: হাহাকার ভরা ক্ষিধের। প্লেট ভর্তি খাবারের থালা আর পূর্ণিমাভরা চাঁদ পাশাপাশি রাখলে 'মানুষখাবারের প্লেট তুলে নেবে মানুষ বলে। খাবার  মানুষ উভয়ই ব্যবহারগত অর্থে পরিচিতএখানে কোন মরীচিকা নেই। যে মানুষ চাঁদ তুলে নেবে সে মানুষ হলেও মানুষ না। জীবনের সকল বোঝাপড়াগুলো যদি নিজের সাথে মিলিয়ে সিদ্ধান্তে যাওয়া যায়তখন অনুভূতির দায়-কমে গিয়ে দায়িত্বে রূপ নেয়। সাধারণ  -সাধারণের পার্থক্য এটাই। জীবনের ব্যপ্তিবোধপরিসীমানির্ধারণভঙ্গি এক এক সময়ে এক এক রকমের  অস্তিত্ব কখনও লোপপায় না। স্থান পরিবর্তন করে মাত্র। এই সকল কিছুর সার্বিকতাই মিলে 'জীবন'

জীবন কোন একক অস্তিত্ব নয়অনেক অস্তিত্বের একতাই

অস্তিত্ব হল মানবিকতার শৈলীশিল্পবোধের পরিচয়। মৃতু্য জীবনের শরীরি রূপকের স্থান পরিবর্তনঅস্তিত্বের নয়
এটি রূপান্তরিত হয় মাত্র। স্থানচু্যত অন্য আকার ধারণ করে আবর্তিত হয়। এর কোন পরিসীমা বা বিনাশ নেই

শুধুমাত্র অনুভূতিগত কারণে অস্তিত্বের এত ভিন্নতা এত তীব্রতা
তাই বলা যায় অনুভূতিবাদজীবনে ঈশ্বরে মতই সত্য 

অনুভূতিবাদকে এক কথায় নির্মাণ এবং সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয়। তবে ভাবা যেতে পারে এদের নিয়ে। দৃষ্টিভঙ্গিমূলকআচরনগতজাগতিকইন্দ্রজালপ্রত্নসত্ত্বাবিজয়ী-হতাশাসহ সর্বক্ষেত্রে অনুভূতিবাদ এর উপস্থিতি। জীবনপ্রকৃতি থেকে আলাদা কিছু নয়। এটি প্রকৃতিরমৌলিকতারবহুমাত্রিকতারউপলব্ধিত শ্রেষ্ঠ অংশযাকে আমরা অনুভূতিবাদ বলছি

অনুভূতি' মাধ্যমে জীবনের বহুমাত্রিক রূপে প্রকৃতি এবং প্রকৃতিতে জীবন বহি:প্রকাশেরচৈতন্য লাভ করে
এই সমগ্র-দর্শনেরসম্বন্বীত  উপলব্ধিত অবস্থার পরিচয় করিয়ে দেয় অনুভূতি
অনুভূতিহীন দর্শনপ্রাণহীন অস্তিত্বের শামিল

চিদ্রূপ : 

সব কিছুর অস্তিত্বায়ন হচ্ছে অনুভূতির গতি বিনিময়পরিবর্তনের মাধ্যমে।  পরিবর্তনের উৎপত্তি গতিময়তার সাথে ভারসম্যপূর্ণ চিরন্তন ঐক্য আর বিপরীতমূখি অন্তফলের মিলন যা নিখুত। অর্থাৎ উপলব্ধির নির্দিষ্ট কিছু একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন দিক হতে অবস্থানগতদৃশ্যগতঐক্যবদ্ধতা বা তৈরীময়তার দরুন বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়। বর্তমানকালই বৈশিষ্ট্য নির্দিষ্ট করেযা ক্ষনস্থায়ী এবং ভবিষ্যৎ ঠিক করে এর উত্তরবর্তী অবস্থান

এই প্রক্রিয়ার মিথষ্ক্রিয়া অবর্তিত হয় গতিময়তার দরুন
প্রকৃিতর সবচেয়ে সরল সারসাত্য হচ্ছে 'গতি'

সৃষ্টিশীলতাস্বতন্ত্রসৃজনশীলতা আর কিছুই নয় এই গতির চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমানে যেটা বৈরী সেটা ঐক্যবদ্ধযেটা নিখুত এখনসেটা সুসংগতসেই সুসমানজস্যহীন কারণ গতির পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য যা কখনও নির্দিষ্ট নয় এবং চিরন্তন। এর প্রত্যেকটি অবস্থাঅবস্থানআত্মপ্রকাশপরিবর্তনবৈশিষ্ট্য নির্ধারণসম্বাভনাক্রমবিকাশ যা প্রত্যেকটির স্বতন্ত্রত নিজস্ব বিকাশ নিয়ম রয়েছে। এগুলো পরস্পর নির্ভরশীল এবং উদ্দেশ্যমুখী অভিব্যক্তির আপতনে গড়া

সবকিছু মূল্যায়িত হয় মনোগত সংবেদদ্বারা। গতির ক্রমবর্ধমান আচরণে দ্রুতিপরস্পর সম্পর্কের বিষয়গত সহজাত রূপঅবস্থান প্রকাশ করে। ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নির্ধারিত হয় অনুভূতির অনন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যখন বিষয় আকারে অন্তঃসম্পর্ক উপস্থাপিত হয়। অন্তঃসম্পর্ক হল এক অস্থির অবস্থা যা পূর্বনিয়ন্ত্রিতপরস্পর নির্ভরশীলবিষয়মুখীকার্য-কারণ সস্পর্ক এবং অন্তর্নিহিত পরম শূন্য অবস্থা থেকে পরমাত্মায় প্রত্যাবর্তন করে অনুভূত হয়মনোগত যুক্তিসহ প্রকাশিত বা উপস্থাপনে। তাই কোন কিছু (বস্তুগত-অবস্তুগতসম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু নির্ধারণ করা যায় না। কেননা গতির দ্রুতির দরুন  সংবর্ধন পরিবর্তনে সমগ্র প্রকৃতির পরস্পর বিরোধী বৈশিষ্ট্য  চরিত্রে এটা অনন্ত। সর্বত্র  অপরিবর্তনীয়সমুহ আন্ত:সম্পর্কিত এবং পরস্পর যোগসূত্র রয়েছে। মূল্যায়নের একমাত্র-উপস্থাপনারপর্যবেক্ষণনির্ধারণনির্ণয়নবিন্যাসনির্দিষ্টকরণগুণ-ধর্ম প্রকাশঅবস্থান তথা প্রতিভূ পরিমান  গুনের অস্তিত্বশীল অধিকারের উপলব্ধি সহজতর অবস্থার প্রতিস্থাপন ঘটায় মনোগত অনুভবে জীবনের আত্মপ্রকাশে সারগতভাবেই পরমশূন্যপ্রকৃতিপরমাত্মাগতিপরিবর্তনদ্বন্দজীবনমনপ্রণালীফলাফলস্থানান্তরপরিবর্তন নির্ভরশীলতাপ্রতিপাদন ক্রিয়ার চৈতন্যঅভিব্যক্তির বিশ্লেষণ  বিন্যাস এর মূল কারণ অনুভূতি। অনুভূতি ছাড়া বোধায়ন সম্বভ নয়। কার্য-কারণ ছাড়া কোন কিছুই হয়না এর ভিত্তিই অনুভূতি

প্রত্যেকটি কিছুর জন্য কিছু না কিছু দায়ী।  দায় পূর্বনিয়ন্ত্রিতসংক্রিয়  বিপরীতমূখি সার্বজনীনতা শুধুমাত্র প্রতিস্থাপিত  স্থানান্তর-পরিবতর্ীত হয়।  সবকিছুর নির্দিষ্ট অন্ত:ফল রয়েছে এবং এগুলো পরনির্ভরশীল আবর্তনীয় এক অবস্থা

অন্ত:সম্পর্কিত প্রতিটি মুহুর্তের সম্বন্ধে প্রতিটি মুহুতের্া অবধারনার সূক্ষ-পরিশীলিত অস্তিত্বচৈতন্যের অনুধাবন অবস্থা হচ্ছে অনুভূতিবাদ। অবস্থাসমূহ মানুষের কাছে বোধ হয় জীবন এর মাধ্যমে। মানুষ মনোগত অবধারনদ্বারা সেই বোধের উপলব্ধি অনুভব করেবৈশিষ্ট্য নির্ণয়করে চেতন-অবচেতনেদৃশ্যগত-অদৃশ্যগত মূল্যায়নে অনুভূত করে

চিদ্রূপ : 

ইন্দ্রিয়গত উপলব্ধির সামার্থই অনুভূতি;

একই বস্তু  অবস্তু সম্পর্কে সম-সময়ে ভিন্নভিন্ন স্বতন্ত্র অবস্থা বা ভাব তৈরি হয়। কেননা এটা নির্ভর করে যে অনুভূতির সামর্থের উপরতাই একই সময়ে একই বিষয়ে একই কিন্তু ভিন্নভিন্ন উপলব্ধির জন্ম।  অনুভূতিবাদ প্রক্রিয়াটির আচরন  প্রকাশ নির্ভর করে বস্তু  অবস্তুর অবস্থার সম্পর্কে জ্ঞানমানুষের জীবনের অভিজ্ঞতার ভারসাম্য স্থাপনেক্রিয়াকলাপের ধরণচাহিদা  অনুভূত বোধায়ন দ্বারা। অনুভূতির পুরো ব্যাপারসমূহের পুরনপুরো ব্যাপার সমূহের গুণ-ধর্মের তথা সামগ্রিক বৈশিষ্টের অস্তিত্বায়নপ্রতিস্থাপনস্থানান্তর করে বিষয় সম্পর্কে আমাদের জ্ঞাতাব্য তথ্য প্রদান করে। সমস্ত ইন্দ্রিগুলোর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্যস্থতা  ভারসাম্য স্থাপনকরে বোধায়ন সম্পন্ন হয় অনুভূতির সঞ্চারণে। এই সঞ্চারণ সামর্থ হচ্ছে অনুভূতির গতি বিনিময় ক্রিয়া পর্ব। আমাদের চারপাশের সসীম-অসীমবস্তুগত-অবস্তুগত সর্বপরি সমগ্র জগৎটাকে আমরা যেমন বোধায়নে অনুভূতির সঞ্চারণ করে মহাজগৎ কে উপলব্ধি করি যাআসলেও জগৎটা তেমনই

আবার কখনও কখনও মনে হতে পারে পুরো প্রক্রিয়ায় আমরা ভুল তথ্য  চরিত্র পেতে পারি। কেননা এটা নির্ভর করে আমাদের মনোগত অবস্থার উপর। আমাদের মনমেজাজস্বাস্থ্য এর সুস্থ্যতা  অসুস্থতার উপর। তাই একই বিষয়ে ভিন্নভিন্ন ভাবে সমসময়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা অবলোকন করি

অনুভূতি হচ্ছে মানবের ইন্দ্রিয়গত প্রতিরূপের অন্তর্বস্তু যা অপরিবর্তনীয়। তাই অনুভূতি আমাদের অভ্যাসগুলো  অবস্থার উপর নির্ভরকরে এবং সেটায় উপলব্ধির বোধায়ন বিদ্যমান থাকে। আবার অনেক সময় কিছু সম্পর্কে আরো বেশি তথ্যবোধায়নে পেতে সাহায্য করে। মানুষ আপতদৃষ্টিতে শুনতে-বোধ করতেস্পর্শ করতেদেখতেপারে একটি নির্দিষ্ট সীমা-পর্যায় পর্যন্ত  কিন্তু সসীমতা-অসীমতা নিরাকার  অবিনাশী অবস্থা অবধারণের প্রকৃত বোধায়নসীমা আমাদের ইন্দ্রিয়গত অতিক্রমে বাধাগ্রস্থ হয়। কারণ পূর্বনিয়ন্ত্রিত অবস্থা যেটা কাযর্-কারণ বা উদ্দেশ্য নির্ণয় করে আমাদের একটি নির্দিষ্ট সীমায় আবদ্ধ রেখেছে। মানুষের সীমালংঘনের সামর্থ নাই

অনুভূতি হচ্ছে মানবের ইন্দ্রিয়গত প্রতিরূপেইন্দ্রিগুলোর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্যস্থতা  ভারসাম্য স্থাপনকরে বোধায়ন

চিদ্রূপ : 

                      কবিতাজীবন  কবি : অনুভূতিবাদ

সাধারণ মানুষের জীবন  জাগতিক যে অভিজ্ঞতা আছে। কবিদেরও সেটা আছে। সাধারণ মানুষের জীবন  জাগতিক যে সকল অভিজ্ঞতা নেই সেটাও কবিদের আছে। কবিদের কাছে জীবনের সাধারণ জ্ঞানের সাথে সাথে আত্মার সকল উপাদানের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় অনুভূতির মাধ্যমে। তাঁর গতিময় সৃজনশীলতার প্রতিবন্ধকতা গুলোকে সরিয়ে দিয়ে সৃষ্টি করেন সুন্দর আর সংহতির সাবলীল ভারসাম্য। প্রদান করেন শাশ্বত অনুভূতির উপলব্ধি। তাঁর চিন্তাধারাকেজীবনবোধকেঅস্তিত্বের সংরাগকে অভিনবত্বের উপস্থাপনায় তুলে ধরণ সত্যের সৌকার্য  অনুভীত শৈলীর সুক্ষ্মতায়। দর্শনের দীপ্তীময়তা আর নান্দনিক অম্লান অর্ঘ্য দিয়ে নির্মাণ করেন বোধের মন্দির। স্রষ্টার আসনে বসে স্বকীয় অনুভবের জীবনবোধের দর্শনে কথা বলছেন অথচ বলছেন সকল মানুষের মনের কথা যা আত্মাকে সমৃদ্ধ করে পাশাপাশি সুউচ্চ আদর্শের পথে এগোবার নির্দেশনা দান করেন
একমাত্র কবিই জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক
সে সকল কাল এবং অস্তিত্বের দ্রষ্টা তাঁর পক্ষে সাধারণ মানবিক-জাগতিক জীবনকে শুধুমাত্র উপলব্ধিত উপকরণ ছাড়া অন্য কোন গুরুত্ব বহন নাও করতে পারেন
সে সমগ্র সত্যের প্রেমিক
জ্ঞানের প্রতি প্রেমজীবনের প্রতি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিযা তাকে শাশ্বত সত্যের আলোর নির্দেশনা দেবে। যে আলোতে কোন অন্ধকারের আশাংকা নেই। কবি কোনক্রমে অসত্যকে গ্রহণ করবেন না। সে অবশ্যই সংযমী  উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবে। আত্মার যে শক্তিতে অস্তিত্বের জীবনেরঅনুভূতির। আচরণেরশ্বাশ্বত্য সত্যের যথার্থ সত্য অনুধাবন করা সম্ভব। যে শক্তি অনুভীত অস্তিত্বের নৈকট্যে এবং সাদৃশ্যে ভাস্বরজীবনবোধের সম্মেলনে প্রজ্ঞা এবং যথার্থতার জন্মদান করেসে শক্তি অনুভীত উপলব্ধির সম্যক সন্ধানী যতক্ষণ না পর্যন্ত সকল অস্তিত্বের মূলক উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় ততক্ষণ সে শক্তি তথা কবির অন্বেষীত অনুভবের বিরাম নেই। তৃপ্ত হয় না সে শক্তি

কবিরা উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে আমাদের সুক্ষ্মগতির অন্বেষণ করেন।  চরিত্রে মহৎ আত্মকরণ থাকবে। এই মহৎ আত্মকরণ নিয়ে সে সকল অস্তিত্বের সন্ধানে নিয়োজিত হবে

কবিত্বের প্রধান লক্ষ্য শুধু কবিতা চর্চা নয়। অনুভূতির সম্পূর্ণতা অর্জনের চেষ্টা করা। প্রত্যেক সত্তার মধ্যে উত্তম এবং অধমের অস্তিত্ব রয়েছে। স্বভাবতই কবিদের পাশাপাশি -কবিদের অস্তিত্ব থাকবে। এটাই সার্বজনীন

প্রকৃত কবি সেই যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের অস্তিত্বের সত্তাকে উপলব্ধিত করতে সক্ষম। যার জীবনবোধের অনুভীত অভিজ্ঞতা নেই সে প্রকৃত কাব্যচর্চা করতে অক্ষম। এই অক্ষমতার অনুপাতে আর যাই হোক সে কবি হতে পারে না। এটা যতখানি উপলব্ধিত ততখানি অস্তিত্বগত  স্বর্গীয় সহায়তা প্রাপ্ত। স্বর্গীয় সহায়তা একমাত্র ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিগণের উপর ন্যাস্ত হয়। মানুষের এই ক্ষুদ্র জীবনে এটাকে পুরোপুরি আত্মস্থ করা একমাত্র অলৌকিক সহযোগিতা ছাড়া প্রায় -সম্ভব। এমন কিছু ব্যক্তি এমন লক্ষকে সাধন করতে চায়যে লক্ষ্য তাদের সাধ্যের উধের্্ব। ফলে সংখ্যাহীন অসঙ্গতীর কলঙ্ক লেপন করে। সার্বজনীন নিন্দার পাত্র করে তোলে পুরো কবি সমাজটাকে। এই -কবিদের ভিড়ে প্রকৃত কবিগণ নীরব এবং নি:সঙ্গ জীবন যাপন করে। কামনা করে -কবিত্বের সস্তা ফাঁদের স্রোতে ভেসে না যান। জাগতিক ঐন্দ্রজালের স্পর্শ শূন্য হয়ে জীবন উপভোগ  ধারণ করেননিজস্ব নিয়মে

আর তাই তাঁরা উপলব্ধি করতে পারেন অনুভূতির পূর্ণাঙ্গ পাঠে মুল সত্যের অন্বেষণে। তাঁরা মানুষের মত জীবনকে আচরণকে বিন্যস্ত করবেন নাজড়িত করতে চাইবেন না নিজেদেরকে এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই

প্রকৃত কবিগণ জাগতিক জড়তার শৃঙ্খল মুক্ত স্বশাসিতকৌতূহলীক্ষেত্র বিশেষে উদ্বেগহীন এবং প্রশ্নবিদ্ধ এক নিজস্ব জগতের মধ্যে বসবাস করে। নিজের প্রয়োজনমত এর নির্মাণ  পুননির্মাণ করেন। অচঞ্চল মূল্যবোধে আস্থার গভীর সুর তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়। তারা নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যের নিয়ন্তা হয়ে ওঠেন অনন্ত কোন কোন ক্ষেত্রে

সব কবিরই একই নিজস্ব যুগ রয়েছে

রয়েছে নিজস্ব কিছু রীতিকিছু উদ্ভাবনী আর কিছু নির্দেশনা। সমকাল হচ্ছে সর্বদাই দুর্বোধ্য যুগ। প্রকৃত কবিরা চিন্তাররাজ্য নিয়ন্ত্রণে চিৎকার করেনঘৃণা করেনতাঁরা লালন করেন নিজস্ব একান্ত জীবন থেকে নেওয়া অনুভীত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান নতুন আবিষ্কারেরবিচারেরপ্রগতিরপরবাস্তবতারলৌকিকতারআধ্যত্ম অনুসন্ধানের ধ্বংসের। সৃষ্টির সুর ধ্বনিত হয় তাদের কবিতায়। জীবন  কবিতার সমন্বিত অনুভবের উপলব্ধিহীন কবিকে কতটুকু আসলে কবি বলা যায়। যেখানে তারা বিবর্তনের নিষ্ক্রিয়তার জন্য উন্মুখপরাজয়ে পরিতৃপ্তীনিস্পৃহাদার্শনিক আরাধনায় ঔদাসীন্য সহ প্রভৃত আচরণদ্বারা নিজেদের বাঁচাতে সর্বদা প্রচলিত নিয়মে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। নিজেদের সন্তুষ্টির জন্য মনস্ততত্তের্ব বিমূর্তয়ান ঘটায়। আর এদের ভিড়ে প্রকৃত কবিগণ অদ্ভুতরহস্যময় আর অপরিচিত হয়ে উঠছেন। এই রহস্যময়তা বা অস্বাভাবিকত্বের মূল যাই হোক না কেন এই হালের প্রদর্শনী প্রক্রিয়ায় এর স্থায়িত্ব সাময়িক কারণ প্রকৃত পাঠক কখন  কখন দ্বীধাগ্রস্থ হয়ে পড়লেও কালের সন্ধিক্ষণে এসব ধোপে টিকবেনা। দ্বীধাগ্রস্থহীন এই সময়টা "ভয়ঙ্কর অস্বাভাবিকত্বরূপে জীবনবোধের অন্তর্দৃষ্টি কামনা করে। বর্তমান কালের প্রধান সুর বলে সাধারণত স্বীকৃত  পরিচিত এই অস্বাভাবিকত্ব এবং অচেনার অনুভূতির সঙ্গে যে বিভ্রান্তিনৈরাশ্য এবং টানাপোড়ন অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত তার সাথে সাথে প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ একটা ব্যাপক অন্তমর্ূখিনতার প্রবণতাও যুক্ত হয়। এই অনীস্বীকার্য যে সময়ের মধ্যে দিয়ে বহুলাংশে যে মনোভাব প্রকাশিত তা অসহনীয়বেদনাতুর এবং সুতীব্র যা সহ্য করা যায় না। কবিকবিতাজীবন এর অনুভবহীনতা যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে ততক্ষণ অস্তিত্বের দর্শন দুর্বহ চিন্তার ভার বহন করবে। কবিতার ক্ষেত্রে যখন অস্তিত্ববোধহীনতার সঙ্গে জীবনের উপলব্ধিত অনুভবহীনতা জড়িত হয় আর কাব্যচর্চার মুখ্য মোহ তখন সেই সব -কবিগণ প্রকৃত কবি  কবিতার দিকে সতৃষ্ণলোভাতুরঅনুকরণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিজেদেরকে অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য প্রাণপণ দিয়ে একই জায়গায় নিজেকে প্রতীক্ষার চেষ্টা করেজায়গাটা অপরিচিত হবার দরুণ এমন একটা জায়গায় এসে পেঁৗছায় যা ইতোপূর্বে কখন ভাবেনি। সে বর্তমানে কোথায় সে বোধ পর্যন্ত অবলুপ্ত হয়ে যায়। অগত্য সকল মৌলিকতাকে কঠোরভাবে অবদমিত করে এবং অনুরূপভাবে সব বিচার-বিবেচনা বিসর্জন দিয়ে নিজেকে কৃত্রিম আবরণে চকমকি করে সস্তায় উপস্থাপন করে। ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধি এবং অনুভূতির ধ্বংস করে সস্তায় বাজারজাত হবার পদ্ধতি সহজ হওয়ায় অধিকাংশ ব্যক্তি কবি হতে গিয়ে তারা আপন সত্তা সম্পর্কে সকল প্রকার বোধের শূন্যতায় পর্যবসিত হয়ে গতিহীন অনড় হয়ে পড়ছে
প্রকৃত কবিগণজীবনের ক্ষণিকতাভঙ্গুরতাঅনিশ্চয়তা এবং অনুভূতির উপলব্ধিত জগৎ মানবিক প্রচেষ্টার পরিপূর্ণ পাঠ এর অনুসন্ধান করেন কখন তাই বিদ্রোহ করেন নিজের উপর নিজে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালাতে উদ্যত হন সহানুভূতিশীল সাম্যকথাআবিষ্কারপ্রতীকী উপস্থাপনকামনার ক্রোধউচ্ছাসের তাগিদে উদ্ভাবন করে ফেলেন সংঘাত বিক্ষুব্ধ যুক্তিহীন এক খেয়ালী জগৎ সে জগতের চারপাশে হঁ্যা-না এর দ্বন্দ্বযুদ্ধযৌনতাবিপ্লবচরম বিপর্যয়ের আসন্ন আভাস ছাড়াও এবং মানবিকতাবাদভাববাদহতাশাবাদ  তাঁর অন্তর্নিহিত সহজাত ক্ষমতাযুক্তিবাদআস্থা-ভাবনার দর্শনে অনুভূতির স্তরে স্তরে পরমাত্মার উপস্থিতি আস্বাদন করেন আর কবিতা হয়ে ওঠে কবির অন্তরের গভীরতম সত্তার আলোড়িত আশাবাদ আমাদের যুগেরসম্ভাবনা  সময়ের প্রতিশ্রুতি জীবনের নবরূপায়ণ


চিদ্রূপ : 7(b)
আদম যখন ঈশ্বর

আমার অংশগুলো টুকরো টুকরো
শব্দগুলো ব্যবচ্ছেদে বিপন্ন বিলুপ্ত প্রায়
ভাষা বির্নিমাণের প্রয়োজনে জরুরী হয়ে ওঠে
ভাব বিনিময় নগদায়নে খরচের খাতায়
সব কিছু ফিরে যাবে মূলে সেই শূন্যে!
তবু কেন না যাবার বাহানায় মেতে উঠি?

আমি জানি আমার অজানা অদেখা
আমার মতো অন্ধকার আলোর শহুরে একা।
হতবিহ্বল একা াসীম এক অন্য আমি সেই শূন্যে!
যে আমি স্বং ঈশ্বর তাঁর নিজ আদলে আদম বানালেন
যে আমায় সেজ্দা করেছিলো ফেরেছতাকূল।

আমিতো ঈশ্বর নই!
ঈশ্বরের মতন কেউ আদম আদলে
ফিরে যাবে মূলেসেই শূন্যে!
তবে আমিতো ঈশ্বর নই?
তবে কেন ঈশ্বর মনে হয়!

ঈশ্বর নিজ আদলে আদম বানালেনমানুষ আদলে নয়।
আদমের বাম পাজরের হাড় দিয়ে সঙ্গী বানালেন হাওয়ানারী নয়।
আমি আদমআমি শুধু পুরূষ কিম্বা শুধু নারী নই!
আমার সঙ্গীও না। তবে কেন আমাদের নারী  পুরূষ হিসাবে ভাগ করো
নিজেরা কি দেখনা নিজেদের এক একটা নামে বাজারে তোল?
আমাদের যেদিন ফিরে যেতে হবে মূলেসেই শূন্যে!
কাকে আমারা প্রশ্ন করবোকার কাছেকে দেবে এর উত্তর?

দয়া করে এখন থেকে শুধু পুরূষ কিম্বা শুধু নারী বলে ভাগ'না করে
আদম বলে ডেকোনইলে আদম ঈশ্বর হয়ে উঠলে
তোমরা কাকে ব্যবচ্ছেদ করে নারী  পুরূষ বলবে?
আর না পারলে শুধু মানুষ বলে ডেকো!

আমি আদমআমিও ঈশ্বরের মতো দয়াময়!
আদম যে তাঁর আদলেই সৃষ্টি!

তবে আমি আদম কেন ঈশ্বর নই?
তবে কেন নিজেকে ঈশ্বর মনে হয়!

আর তোমাদের আজাজীল এর মতো শুধু পুরূষ কিম্বা শুধু নারী বলে ভাগ করার জন্য শয়তান বিশেষণ দিয়ে তাড়িয়ে দেবো আদমের সাম্রাজ্য থেকে।

ঈশ্বর বলে না ডাকতে পারলে শুধু মানুষ বলে ডেকো!
শুধু নারী কিম্বা শুধু পুরূষ বলে ডেকো!
নিশ্চয় মানুষের জন্য আদমের নিদর্শন রইলো।

১৮.১২.১১
অনুভূতিবাদ:সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ



No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages